Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
আজ থেকে প্রচারযুদ্ধ
বিস্তারিত
  • আ. লীগ জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে
  • বিএনপি আলোচনায় থাকা নেতাদের প্রার্থী করেছে
  • সাংসদেরা প্রচারের সুযোগ পাচ্ছেন না

তিন সিটি করপোরেশন এলাকায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রচারযুদ্ধ। গতকাল সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আজ প্রতীক পেয়েই প্রার্থীরা মাঠে নেমে পড়বেন। ভোট গ্রহণ ৩০ জুলাই।

রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে সরকারি দল আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধভাবেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সরকারের শরিক ১৪ দল ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছে। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। সিলেটে সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং বরিশালে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

অপর দিকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি আলোচনায় থাকা নেতাদেরই প্রার্থী করেছে। কিন্তু সিলেটে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক নিজ দল ও জোটের ভেতরে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। সেখানে ২০-দলীয় জোটের প্রভাবশালী শরিক জামায়াত মেয়র প্রার্থী দিয়েছে। বিএনপির মহানগর সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। বরিশাল বিএনপিতে বিদ্রোহ নেই, প্রার্থী সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার। রাজশাহীতে সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

গত ১৫ মে খুলনায় এবং ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন। এই দুই নির্বাচনেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানির অভিযোগ ছিল। ভোটের দিন জাল ভোট দেওয়া, জবরদস্তির ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন ও সরকারি দলের আক্রমণাত্মক ভূমিকার কারণে ভোটের দিন বিএনপি কার্যত মাঠছাড়া ছিল। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তিন সিটির ভোটে সরকারি দল ‘খুলনা ও গাজীপুর কৌশল’ বজায় রাখবে কি না, এই আলোচনা এখন ভোটের মাঠে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের জুনে একই দিনে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। পরের মাসে নির্বাচন হয় গাজীপুরে। সব কটিতেই বিএনপির প্রার্থীরা মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর বিএনপি নিজেদের জনপ্রিয় দল হিসেবে প্রচার করে। এবার চাইলে সরকার সব সিটিতে একসঙ্গে ভোট দিতে পারত। কিন্তু আওয়ামী লীগ আগ্রহী ছিল না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুর ও খুলনার পর আসন্ন তিন সিটিতেও আওয়ামী লীগের অবস্থান ভালো। মানুষ উন্নয়নকেই বেছে নেবে বলে তাঁর বিশ্বাস।

সাংসদেরা প্রচারের সুযোগ পাচ্ছেন না
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সরকারের মতভিন্নতায় সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ থমকে আছে। এর ফলে তিন সিটির নির্বাচনে সাংসদদের প্রচারে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।

ক্ষমতাসীনদের দাবির মুখে সাংসদদের সিটি নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে তড়িঘড়ি বিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিল ইসি। পরে সমালোচনার মুখে পিছটান দেয়। তারা স্থানীয় সাংসদ বাদে অন্য এলাকার সাংসদদের প্রচারের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করে। কিন্তু সরকার চাইছে সব সাংসদকে এই সুযোগ দেওয়া হোক। এ অবস্থায় আটকে আছে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ।

ইসি সূত্র জানায়, গত ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাংসদদের প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে আচরণ বিধিমালা সংশোধনের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসির আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটি সব সাংসদকে প্রচারের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করে। তারা আচরণ বিধিমালার রাষ্ট্রীয় সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকা থেকে সাংসদদের বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে গত ২৪ মে ইসির সভায় সব সাংসদকে প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে বিধিমালা সংশোধনের অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ইসির এই সিদ্ধান্তে আপত্তি দেন। পরে ইসির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়।

সমালোচনার মুখে গত ২৯ মে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, সব সাংসদ সিটি নির্বাচনে প্রচারের সুযোগ পাবেন না। যে সিটিতে নির্বাচন হবে, সেই সিটির স্থানীয় সাংসদেরা প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।

ইসির নতুন এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মতামত (ভেটিং) চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পেয়ে এবং এসআরও জারির পর কমিশন তা অনুমোদন করে প্রজ্ঞাপন জারি করলে বিধি সংশোধন হবে।

ইসি সূত্র জানায়, গত ১১ জুন আইন মন্ত্রণালয় কয়েকটি পর্যবেক্ষণ দিয়ে ইসির প্রস্তাব ফেরত পাঠায়। তাদের পর্যবেক্ষণে সব সাংসদের প্রচারে অংশ নেওয়া এবং সার্কিট হাউস ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় বলেছে, সাংসদদের কেউ প্রচারের সুযোগ পাবেন, আবার কেউ পাবেন না, এমনটা হলে বৈষম্য তৈরি হবে। এ অবস্থায় ইসি এখনো তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়নি। আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণগুলো ইসি পর্যালোচনা করছে।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা সংশোধনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় তাদের কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। এখন পূর্ণাঙ্গ কমিশন বসে এগুলো বিবেচনা করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আচরণ বিধিমালা সংশোধনের প্রজ্ঞাপন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সাংসদেরা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন হচ্ছে দলীয়ভাবে। সাংসদদের নির্বাহী ক্ষমতা নেই। ফলে তাঁদের প্রচারের বাইরে রাখা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। বিধি সংশোধন করা উচিত।

ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
10/07/2018
আর্কাইভ তারিখ
10/07/2018